গত ৫ দিন আগে ঘটে যাওয়া শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের শিক্ষার্থী দিয়া ও রাজীব এর অকাল প্রানহানির প্রতিবাদে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলন ও অঝর বৃষ্টি মিলেমিশে প্রায় অচল করে দিয়েছে সাধারন মানুষের দৈনন্দিন কাজকর্ম। মূলত তাদের দাবি একটাই, “নিরাপদ সড়ক “। সাধারন মানুষও চায় তাদের দাবি যৌক্তিক এবং তা পূরণ হউক। আমিও চাই!
প্রিয় আন্দোলনকারী ভাই ও বোনেরা,
তোমাদের নিরাপদ সড়কের দাবির সাথে আমিও আছি। এটা শুধু তোমাদেরই দাবি নয় এটা বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষের অধিকার। তবে আমার মনে হয় তোমাদের এখন ঘরে ফিরে যাওয়া উচিৎ। আমি মনে করি তোমাদের এই আন্দোলন প্রশাসনকে ইতিমধ্যে লজ্জিত করে তুলেছে। আশা রাখি এই আন্দোলন, পুলিশকে অজয় দেবগানের সিংহাম মুভি দেখার প্রয়াস যোগাবে এবং আরও বেশি দায়িত্বশীল করে তুলবে। তোমাদের এই আন্দোলন সরকারের দৃষ্টি প্রতিবন্ধকতা গিলে নিয়েছে। তোমাদের দায়িত্ব শেষ তাইতো এখন ঘরে ফিরে যাওয়া উচিৎ বলে আমি মনে করি।
তোমরা জান যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীও তোমাদের আন্দোলনের প্রতি সম্মান দেখিয়েছেন। ৯ দফার কিছু কিছু দফা ইতিমধ্যেই বাস্তবায়িত হতে চলেছে । তবে কিছু কিছু দফা সহসাই বাস্তবায়ন করা গনতান্ত্রিক সরকারের পক্ষে সম্ভব হবেনা। তা তোমরাও একটু একটু বুঝ। তবে বিশ্বাস কর তা আস্তে আস্তে হবেই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যেহেতু তোমাদের এ বিষয়ে নজর দিয়েছেন, তাঁর উপর আস্থা রেখে তোমরা ঘরে ফিরে যাও। বড়জনরা তথা মা বাবারা এখনো তোমাদের সাথে আছে- ভালোবেসে। বেশিদিন আন্দোলন চালিয়ে তোমাদের এই মহৎ উদ্দেশ্যকে ভিন্ন আন্দোলনে পরিণত কোরোনা। তোমাদের ম্যাসেজ প্রশাসন অলরেডি পেয়ে গেছে। কারো উস্কানিতে লাফিওনা । তোমাদের ক্যারিয়ের ইতি টেননা।
যে কাজগুলি ট্র্যাফিক পুলিশ পারেনি তা তোমরা করে দেখিয়েছ। হাজার মানুষের ভালবাসা পেয়েছ। আর কি চাও। মনে রাখা দরকার, কোন আন্দোলন দীর্ঘস্থায়ী হলে জনরোষ বেড়ে যায় এবং জনগনের সাপোর্ট পাওয়া যায় না। হিতে- বিপরীত হয়। তোমরা জাতির ভবিষ্যৎ তাই ক্লাসে গিয়ে বর্তমানটা মজবুত কর। তোমরা এমনটা ভেবনা যে পুলিশ তোমাদের ভয়ে জড়সড় হয়ে দাঁড়িয়ে ফ্যালফ্যাল করে তোমাদের কাণ্ড দেখছে। না, তারা এখন আকস্মিক প্রশ্নে ধইজ্জের পরীক্ষা দিচ্ছে তোমাদেরই কাছে। তোমারা যেন ফাঁস হওয়া প্রশ্নে ফেল মেরনা। তাই থেমে যাও। এখন ঘরে ফিরে যাওয়া উচিৎ।
পুলিশ ভাইদের বলতে চাই, আপনারা খুদ খেয়ে পেট নষ্ট করবেন না। আপনাদেরকে দেখি কেও আর ভয় পায়না। ক্লাস ৩/৪ এর বাচ্ছারাও আপনাদেরকে দেখে ইয়ারকি করে। এতেও আমাদের খারাপ লাগে। সিংহাম হয়ে জান দেখবেন সাধারন জনগন মাথায় তুলে রাখবে। আপনারা মনে রাখবেন সিনেমাতে নায়ক যখন ভিলেনকে দাবড়ায়, দর্শকরা চিৎকার করে তালি বাজায়। সিনেমা হল হট হয়ে যায়। আপনারা চাইলেই সেই স্বপ্নের নায়ক হতে পারেন।
খুদ খেয়ে পেট নষ্ট করলে আজীবন টয়লেটেই থাকবেন। লেগুনার হেল্পারও আপনাদের গালি দেয় । ঠোলা বলে। আপনারা পারেন সুধু রিক্সাওয়ালার সাথে। কোথাও সম্মান পাবেন না। সবাই ভাবে ১০০ টাকা দিলেই আপনারা কাত। তাই আইনের কঠোর প্রয়োগ প্রয়োজন। ট্র্যাফিক সিগন্যাল /রুল/আইন ভাঙলেই চরম একশন নিন। এমন একশন নিন যাতে অপরাধীর রি- একশন ক্ষমতা লোপ পায় এবং তা দেখে ১০ জন অপরাধী প্যান্টে মুতে।
পুলিশতো আমার ভাই তাই কিছু বলতে পেরেছি । সরকারকে বলতে ভয় পাই। তার পরও বলতে চাই। দেশ এখন নিম্ন আয় থেকে মধ্যম আয়ের দেশ হয়েছে। ট্র্যাফিক সিগন্যাল ভাঙলে ২০০ টাকা জরিমানা এখন আর যথেষ্ট নয় বলে আমার মনে হয়। বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মত জিনিস চাঁদে চাঁদে বাড়ান । জরিমানা কেন নয়? ট্র্যাফিক সিগন্যাল ভাঙলে কমপক্ষে ৫০০০ টাকা জরিমানা ধার্য করেন সাথে ১০০ বার কান ধরে উঠবস ও ১ সাপ্তাহ গাড়ি নামানোয় নিষেধাজ্ঞা। বিফলে মূল্য ফেরত। মাল চাচার বাজেট ঘাটতি পূরণের বৃহৎ উৎস হয়ে যাবে। ভারতের উদাহরণতো ভালই পারেন। পারলে দেখে আইসেন সেখানে ট্র্যাফিক সিগন্যাল /রুল/আইন কে ভাঙ্গে।
১৮ বছরের নিচে লাইসেন্স দিবেন কেন? ওই ড্রাইভার এর তো বা……ও উঠে নাই। শুধু গরু চাগল চিনলেই লাইসেন্স দিবেন কেন? আমরা কি আপনাদের কেউই না? তাহলে নির্বাচনের সময় কেন জ্ঞানের কথা বলেন? আমাদের জ্ঞান একদম খারাপ না যে আপনাদের জ্ঞানে চলতে হবে। আল্লার মাল আল্লায় নিলে আপনাদের দরকার কি?
আমার পরম পূজনীয় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মহোদয়! নির্বাচন খুবই সন্নিকটে । আমার বিশ্বাস আপনি আবারো জিতবেন। তবে আপনার সেই মন্ত্রি পরিষদে দাঁত কেলানো কোন মন্ত্রীই দেখতে চাই না। আপনার সাথে আমার দেখা করার কোন অনুমতি নেই । বিনয়ের সাথে আপনাকে দুটা প্রশ্ন করার দুঃসাহস দেখালাম যে ” যদি সব বিষয়ই আপনাকে দেখতে হয় তাহলে এত বড় মন্ত্রীপরিষদ রেখে আপনার লাভ কি? দেশের লাভ কি?” উনারাতো কিছুই পারেন না; না কি করেন না; বুঝতে হলে কোথায় যাব!!
ইতি-
ঘুমোতে গেলাম।